ঢাকা , শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫ , ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে মাছ আহরণে প্রস্তুত জেলেরা বরগুনায় ডেঙ্গুতে দু’জনের মৃত্যু উত্তরায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে হত্যা মামলার আসামি মার্জিয়া ওয়াসার পানিতে ছড়াচ্ছে বিভিন্ন রোগের জীবাণু সুন্দরবনে ডাকাত আতঙ্ক মধু আহরণ কমেছে লক্ষ্মীপুরে মাদকাসক্ত ছেলের হাতে বাবা খুন শীঘ্রই দেশে আসছেন তারেক রহমান- ডা. জাহিদ সিলেট ও সুনামগঞ্জ সীমান্তে ৭০ জনকে পুশইন বিএসএফ’র রাতে বাড়িতে ফেরেননি সকালে মিলল লাশ ভেস্তে গেল ৩৬ কোটি টাকায় দিঘি সংস্কার কঠোর কর্মসূচির পথে ‘তথ্য আপা’ কর্মীরা পাহাড়ি ঢলে ভেসে যাওয়া দু’পর্যটক এখনও নিখোঁজ পদত্যাগ করলেন পোল্যান্ড কোচ ইংল্যান্ডকে চমকে দিয়ে ইতিহাস গড়ল সেনেগাল ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা দিলো ম্যানসিটি যুক্তরাষ্ট্রের লিগ খেলবেন না রশিদ খান কোহলি-রোহিতকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেবে অস্ট্রেলিয়া একদিনেই ১৪ উইকেটের পতন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে যা বললেন শান্ত দল নিয়ে আমি খুশি : শান্ত

শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ভারতে

  • আপলোড সময় : ১৩-০৬-২০২৫ ১২:৩৮:১৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৩-০৬-২০২৫ ১২:৩৮:১৭ পূর্বাহ্ন
শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ভারতে
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে ভারতে রয়েছেন তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর একাধিক সূত্র ও দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বিষয়টি বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন। সূত্রগুলো জানিয়েছে, ৬ জুন সজীব ওয়াজেদ জয় ভারতে আসেন। তার পরদিনই ছিল পবিত্র ঈদুল আজহা। মায়ের সঙ্গেই ঈদ উদ্যাপন করেছেন তিনি। সূত্রগুলো বলছে, মায়ের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন করার জন্যই ভারতে এসেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তাঁর এ সফর যতটা না রাজনৈতিক, তার থেকেও বেশি পারিবারিক। বাংলাদেশে কার্যত নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন, কিন্তু তাঁর বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছিল। তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ওই পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়। তাঁরা আরও জানান, সজীব ওয়াজেদ জয় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট পেয়েছেন। পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার কয়েক দিন আগেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড পান। গ্রিন কার্ড পাওয়ার পর থেকেই সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভারত ভ্রমণ নিয়ে আলোচনা চলছিল। ভারতের সূত্রগুলোও এমন তথ্য দিয়েছে। ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থার সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে প্রাথমিকভাবে মাস কয়েক পরে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভারতে আসার কথা ছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তাঁর ভারতে আসার ব্যাপারে সবুজসংকেত দিয়েছিল। তবে সেই সফর এগিয়ে এনে ৬ জুন দিল্লিতে আসেন সজীব ওয়াজেদ জয়। নিরাপত্তা সংস্থার সূত্রগুলো বলছে, বিমানবন্দর থেকে যথাযথ নিরাপত্তা দিয়েই তাঁকে শেখ হাসিনা যে গোপন ঠিকানায় আছেন, সেখানে পৌঁছে দেওয়া হয়।ওই ঠিকানায় শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানাও রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগের কয়েকটি সূত্র। ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থার সূত্রগুলো এ-ও জানিয়েছে যে ভিভিআইপিদের যেভাবে পাইলট কারসহ সামরিক পোশাক পরিহিত নিরাপত্তারক্ষীদের ঘেরাটোপে নিয়ে যাওয়া হয়, ঠিক সেভাবে সজীব ওয়াজেদ জয়কে বিমানবন্দর থেকে নেওয়া হয়নি। তবে কড়া নিরাপত্তা ছিল, আর পুরোটাই করা হয়েছে অত্যন্ত গোপনে। আবার শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকেন। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক। কিন্তু ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছে কি না, সেটা কোনো সূত্র থেকেই নিশ্চিত করা যায়নি।
আওয়ামী লীগের যেসব নেতা এখন ভারতে রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে একাধিক জন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন যে সজীব ওয়াজেদ জয়ের এই ভারত সফর মূলত পারিবারিক। এক শীর্ষ নেতা বলছিলেন, ‘মায়ের সঙ্গে এত মাস পর ছেলের দেখা হয়েছে। তাঁরা ঈদ কাটিয়েছেন একসঙ্গে, গত কয়েক দিন একসঙ্গেই আছেন। নিশ্চয়ই রাজনৈতিক আলোচনাও হয়েছে কিছু। তবে জয়ের এ সফর বেশিটাই পারিবারিক সফর।’ ওই নেতা আরও বলেন, ‘এই কয় দিনের মধ্যে নেত্রীর সঙ্গে কথা হয়নি। কিন্তু যখন কথা হবে, নিশ্চয়ই আমরা জানতে পারব যে তাঁদের দুজনের মধ্যে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এখন তাঁরা পারিবারিক সময় কাটাচ্ছেন।’
গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজে চড়ে ভারতে পালিয়ে আসার পর থেকে দিল্লিতেই শেখ হাসিনার থাকার ব্যবস্থা করেছিল ভারত সরকার। প্রথম দু-চার দিন শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানাকে রাখা হয়েছিল দিল্লির উপকণ্ঠে গাজিয়াবাদের হিন্দন বিমানঘাঁটির টার্মিনাল বিল্ডিংয়ে, যেটির নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার ভার দেশের বিমানবাহিনীর। কিন্তু চট করে শেখ হাসিনার তৃতীয় কোনো দেশে পাড়ি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না, এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠার পর ভারত সরকার তাঁকে হিন্দন থেকে সরিয়ে দিল্লির কোনো গোপন ঠিকানায় আনে। পরে তাঁকে হয়তো দিল্লির কাছাকাছি অন্য কোনো সুরক্ষিত ডেরাতে সরিয়েও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে ভারত সরকার কোনো তথ্যই প্রকাশ করেনি। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা, যিনি শেখ হাসিনা ভারতে আসার পর থেকেই তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপের ব্যাপারে অবগত, তিনি বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা শুভজ্যোতি ঘোষকে জানিয়েছিলেন ‘মুভমেন্টস অ্যান্ড ভিজিটস-অ্যাজ লিটল অ্যাজ পসিবল’, অর্থাৎ শেখ হাসিনাকে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া, কিংবা তার সঙ্গে অন্যদের দেখা করানোর ব্যবস্থা-এটাও যতটা সম্ভব এড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে শেখ হাসিনার মুভমেন্টস বা ভিজিটস যে পুরোপুরি বন্ধ নয়, তাঁর কথায় সেই ইঙ্গিতও ছিল!
তবে ভারতে অবস্থানরত এক শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে শেখ হাসিনার নিয়মিত কথা হলেও সশরীর কারও সঙ্গে দেখা করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী-এ রকমটা তার জানা নেই।
আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানাচ্ছে, শেখ হাসিনার কাছে এসে তাঁর ছেলে পারিবারিক সময় কাটানোর সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনা করছেন ঠিকই, তবে ভারতে থেকে গিয়ে দলের কাজকর্মে সশরীর যোগ দেওয়ার অভিপ্রায় নেই সজীব ওয়াজেদ জয়ের। একটা সময়ে অবশ্য শোনা গিয়েছিল যে ভারত সফরে এসে সজীব ওয়াজেদ জয় কলকাতায়ও আসতে পারেন। কলকাতা ও তার আশপাশের অঞ্চলেও যেহেতু আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা থাকছেন এবং এই অঞ্চলেই রয়েছেন বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা আওয়ামী ঘনিষ্ঠ অনেক ব্যবসায়ী, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা, আইনজীবী প্রমুখ, তাই কলকাতায় এসে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন সজীব ওয়াজেদ জয়-এ রকমটা জানা যাচ্ছিল। এখন ভারতের নিরাপত্তা সংস্থার সূত্রগুলো বলছে, অন্তত এবার তাঁর কলকাতায় আসার কোনো পরিকল্পনা নেই। আবার আওয়ামী লীগের সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, দীর্ঘ সময় ভারতে থাকার পরিকল্পনা নেই তাঁর। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি হয়তো ফিরে যাবেন।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স